ডিজায়ার আন্ডার দি এলমস
ইউজিন ও নীল এর ডিজায়ার আন্ডার দি এলমস
অনুবাদ : কবীর চৌধুরী।
ডিজায়ার আন্ডার দি এলমস
মার্কিন নাটককে বিশ্বসাহিত্যে অধিষ্ঠিত করার গৌরব প্রায় এককভাবে ইউজিন ও নীলের বলা যেতে পারে।নিঃসন্দেহে তিনি আমেরিকার শ্রেষ্ঠ নাট্যকার।
ইউজিন ও নীলের অন্যতম নাটক ডিজায়ার আন্ডার দি এলমস।গ্রিক নাটকে আমরা দেখেছি যে, দৈব বা নিয়তি।কিন্তু নীল তুলে ধরলেন ব্যাক্তিগত মনস্তত্তের ট্র্যাজেডি।
নাটকের অন্যতম প্রধান চরিত্র ৭৬ বছর বয়সের এফরায়েম ক্যাবট, নিউ ইংল্যান্ডের একজন পরিশ্রমী ধর্মবিশ্বাসী খামার মালিক।তার তিন পুত্র।প্রথম দুই পুত্র তার প্রথম স্ত্রীর, শেষ পুত্র তার দ্বিতীয় স্ত্রীর।তার দুইজন স্ত্রীই মারা গেছে।
তিনজন পুত্রই তাদের বাবাকে পছন্দ করে না
প্রথম দুই পুত্র তাদের সম্পত্তি ছোট ভাইয়ের কাছে বিক্রি করে বিদেশ পাড়ি দেন। এর মধ্যে তাঁদের বাবা আবার বিয়ে করে বাড়িতে আসেন।তাঁদের বাবা এমন একজন কে বিয়ে করে যে তাঁর ছোট ছেলের সমবয়সী। এমন যুবতী হয়েও বৃদ্ধকে বিয়ে করেন শুধু মাত্র সম্পত্তির লোভে।কিন্তু বৃদ্ধের ছোট ছেলেও নাছোড়বান্দা। সে তার সম্পত্তি কোনো ভাবেই সং মা কে দিবেন না।সং মা কৌশল অবলম্বন করতে চায়।বৃদ্ধ তখন বলে যদি তিনি পুত্র সন্তান জন্ম দিতে পারে তাহলে সব সম্পত্তি তার নামে লিখে দিবেন।বৃদ্ধের স্ত্রী পুত্র সন্তানের জন্য মরিয়া হয়ে যায়।
কিন্তু তার মাঝে ঘটে আরেক দূর্ঘটনা
বৃদ্ধের যুবতী স্ত্রী বৃদ্ধের যুবক ছেলের প্রেমে পড়ে এবং তারা মিলিত হয়।বৃদ্ধের স্ত্রী পুত্র সন্তান ঠিকই জন্ম দিতে পেরেছে কিন্তু সেই পুত্র সন্তান টি বৃদ্ধের নয় বরং বৃদ্ধের ছেলে।বৃদ্ধ সেটি জানত না।বৃদ্ধ নিজের পুত্র সন্তান হয়েছে ভেবে মহাআয়োজনের ব্যবস্থা করেন।আমন্ত্রিত অতিথিরা সকলেই হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠে আর বৃদ্ধকে বাহ বাহ দিতে থাকে কারণ এই বৃদ্ধ বয়সেও বৃদ্ধের এই কেরামতি দেখে।এখন সব সম্পত্তি পাবে বৃদ্ধের তৃতীয় স্ত্রী।
বৃদ্ধের ছোট ছেলে এটা জানতে পেরে মর্মাহত হন
সে মনে করতে থাকে বৃদ্ধের স্ত্রী তাকে ব্যবহার করেছে পুত্র সন্তান এর জন্য যাতে তিনি সম্পত্তির মালিকানা পেতে পারে।বৃদ্ধের ছোট ছেলে মুখোমুখি হয় বৃদ্ধের স্ত্রীর কাছে।জানতে চায় কেন এমন প্রতারণা করল।কিন্তু বৃদ্ধের স্ত্রী বার বার বলতে থাকে যে প্রতারণা নয় সে তাকে ভালোবাসে।বৃদ্ধের ছেলে বলে প্রমাণ দিতে।
বৃদ্ধের স্ত্রী কোনো পথ না পেয়ে তাদের ছোট সন্তান কে মেরে ফেলে।এভাবে সে প্রমাণ করতে চায় যে সম্পত্তির লোভে নয় তিনি সত্যি সত্যিই বৃদ্ধের ছেলেকে ভালোবাসে।বৃদ্ধ এসব জানতে পারে।বৃদ্ধ পুলিশ কে অবগত করে।পুলিশ এসে বৃদ্ধের স্ত্রী কে গ্রেফতার করতে আসে।পুলিশের সামনে বৃদ্ধের পুত্র ও বলে যে তার ও দোষ আসে।পুলিশ যেন তাকেও গ্রেফতার করে।বৃদ্ধ পুলিশ কে বলে দুজনকেই নিয়ে যান।তারা আমার সাথে প্রতারণা করেছে।পুলিশ দুজনকেই নিয়ে যায়।
বৃদ্ধের সম্পত্তি বৃদ্ধের ই রইল
এই নাটককে প্রথমে অশ্লীল,বিরুচীপূর্ণ বলে অবিহিত করা হলেও এই নাটকের গুণাগুণ এখনও বিদ্যমান।বাংলাসহ নানা ভাষায় এটি অনূদিত।বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই নাটক টি উচ্চস্তরে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
সাদিয়া আফরিন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

পাঠক,লেখক,বিতার্কিক,মুক্তমনা জ্ঞানপিপাসু।