ডায়েট
কিটো ডায়েট
এগ ডায়েট
লো-কার্ব
ওয়াটার ফাস্টিং
সভ্যতার সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তনের ফলে মানুষের চিন্তা-ভাবনারও ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছ। পূর্বে ধারণা করা হতো একটু মোটা-সোটা, ভারী গঠনের দেহই সুস্বাস্থের লক্ষণ। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বিজ্ঞানের অগ্রগতির দরুন সুস্বাস্থ্যের ধারণাও বদলে গেছে। এখন আর মোটা ভারী নয়, বরং দেহের উচ্চতা ও বয়সের সাথে মিল রেখে আদর্শ ওজন ই হচ্ছে সুস্বাস্থ্যের প্রতীক।
বর্তমানে দেহের আদর্শ ওজন বজায় রাখার জন্য এবং অতিরিক্ত ওজন ঝড়িয়ে ফেলার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডায়েট প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কিটো, লো-কার্ব, ওয়াটার ফাস্টিং, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং, এগ ডায়েট, কিউকামবার ডায়েট প্রভৃতি বিদ্যমান।
কিটো ডায়েট বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটি ডায়েট
দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কিটো সবার পছন্দের তালিকায় সর্বপ্রথমে। কিটো ডায়েটের কার্ব এর পরিমাণ একদম কমিয়ে প্রোটিন খাওয়া হয়,, তবে প্রোটিনের পরিমাণ ২০% রাখতে হয়। পাশাপাশি শাকসবজি। কিটো ডায়েট হলো ফ্যাট বার্ন করার প্রক্রিয়া। তবে কিটোতে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিদ্যমান।অনেক সময় অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের ফলে কিডনির উপর খারাপ প্রভাব পড়ে, এতে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই একজন ডায়েটেশিয়ানের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে কিটো শুরু করা উচিত। কারণ আপনার শরীরের জন্য কোনটা উপযোগী সেটা কেবল একজন ডায়েটেশিয়ান ই ভালো বলতে পারবে।

লো-কার্ব ডায়েট এ কার্ব এর পরিমাণ কমিয়ে ডায়েট মেইনটেইন করতে হয়
কিটো তে যেমন ভাত, রুটি খাওয়া যায় না, লো-কার্বে ভাত-রুটি খাওয়া যায়, তবে অল্প পরিমাণে। লো-কার্বে মোটামুটি স্বাস্থ্যঝুকি কম থাকে। লো-কার্বে শাক -সবজি, মাংস, সালাদ, ফলমূল খেতে হয়। তবে ভাত, রুটির পরিমাণ খুবই কমিয়ে নিতে হয়। শরীরের জন্য কতটুকু দরকার তা একজন ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শে মেপে মেপে খেতে হয়।তবে ডায়েটে চিনি এবং চিনি যুক্ত কোন খাবার না খাওয়াই ভালো। অনেকে গ্রিন টি নিয়ে থাকেন। এতে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া ওজন কমানোর জন্য ডিটক্স ওয়াটার ও খুবই কার্যকরী এবং জনপ্রিয় ।

তাছাড়া অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য ওয়াটার ফাস্টিং জনপ্রিয়
এতে দীর্ঘসময় শুধু পানি খেয়ে থাকতে হয়। অনেকটা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর মতো। এতে আট ঘন্টা থেকে ষোল ঘন্টা পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হয়। ফাস্টিং চলাকালীন পানি, চিনি ছাড়া চা, কফি পান করা যায়।

সুষম খাদ্যাভ্যাসের সাথে সাথে ব্যায়াম ও অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত
ব্যায়ামের জন্য দৈনন্দিন হাটা খুবই উপকারী। হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য এবং অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য দারুণ সহায়ক। তাছাড়া বিভিন্ন মুক্তহস্তে ব্যায়াম প্রচলিত। যারা অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাদের কে অবশ্যই খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিয়মিত ব্যায়াম ও করতে হবে।
তারপরে যেটা আছে সেটা হলো ঘুম। ওজনের সাথে ঘুম ও সম্পর্কযুক্ত। প্রাপ্ত বয়স্ক সবাইকে দৈনিক আট ঘন্টা ঘুমানো উচিত। গবেষণায় প্রাপ্ত যারা ঠিক সময়ে ঘুমাতে যায়, রাত জাগে না তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, কিন্তু যারা রাত জাগে,পর্যাপ্ত ঘুমায় না তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে না। হয়তো খুব বেড়ে যায় অথবা খুব কমে যায়।
অনেক সময় দেখা যায় ব্যক্তি তার অতিরিক্ত ওজন কমানোর পরেও আবার তার পূর্বের ওজন ফিরে এসেছে। আর তার কারণ ওজন কমানোর পরেই ব্যাক্তি আবার অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুরু করে। আমাদের মনে রাখতে হবে জীবনের সর্বপর্যায়ে সুস্থ্য জীবনযাপন করতে হবে, শুধু অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য নয়, বরং ওজন কমানোর পরেও সেটা কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে তারজন্যেও আমাদের সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে, শরীরচর্চা করতে হবে। কারণ ওজন কমানোর চেয়ে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখা আরো কঠিন।
আমরা অনেকেই হুটহাট করে ডায়েট শুরু করে দেই কিছু না জেনেই।মনে করি ডায়েট মানে কিছু খাওয়া যাবে না, আরো অনেক ভুল ধারণা নিয়ে বসে থাকি। ভুলবাল খাবার গ্রহণের ফলে ভালোর বদলে খারাপ হয়। তাই হুটহাট কিছু না করে ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শে আস্তে আস্তে ওজন কমাতে হবে কারণ আপনার ওজন যেমন একদিনে বাড়ে নি তেমনি একদিনেই কমে যাবে না।

পাঠক,লেখক,বিতার্কিক,মুক্তমনা জ্ঞানপিপাসু।