জ্যোতির্বিজ্ঞান
জ্যোতির্বিজ্ঞান বা Astronomy কে এককভাবে বিশ্লেষণ করা করা সম্ভব নয়, এর সাথে আরো অনেক বিষয় সম্পর্কিত। আমরা যেমন পরিবার বা সমাজে বসবাস করি বা আমরা ক্রমানুসারে প্রথমে একটি ঘরে বসবাস করি তারপর একটি বাড়িতে ,তারপর একটি গ্রাম বা শহরে।
এভাবে আমরা কোন না কোন ওয়ার্ড,ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা, জেলা, বিভাগ, রাজধানী, দেশ, উপমহাদেশ, মহাদেশ এবং সর্বপরি পৃথীবিতে বাস করি। আমরা যেমন আমাদের গ্রাম বা মহল্লা বা পরিবেশ থেকে শুরু করে পৃথীবিতে অবস্থান করি ঠিক তেমনি আমাদের পৃথীবি ও সৌরজগৎ,গ্যালাক্সিতে অবস্থান করে।
আবার গ্যালাক্সিও ইউনিভার্স, মাল্টিভার্সে অবস্থান করে। সে ব্যাখ্যা দিতে গেলে প্রথমে আমাদের গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ আগেই বলা হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞান কখনই একক ভাবে বিশ্লেষন সম্ভব নয়। এর সাথে ধাপে ধাপে আরো বহু বিষয় সম্পর্কিত।
জ্যোতির্বিজ্ঞান কি?
জ্যোতির্বিজ্ঞান বা Astronomy হল উপগ্রহ, গ্রহ, নক্ষত্র, ধুমকেতু, ছায়াপথ তথা মহাজাগতিক বস্তু সম্পর্কিত বিজ্ঞানকে বুঝায়। ইংরেজিতে Astromony (বাংলায় জ্যোতির্বিজ্ঞান) যেটা গ্রিক শব্দঃ αστρονομία থেকে এসেছে। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের একটি শাখা হলো এই জ্যোতিবিদ্যা বা Astronomy
এই শাখায় মূলত গ্রহ, উপগ্রহ, ছায়াপথ, নক্ষত্র, ধুমকেতু ইত্যাদি মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ বিকিরণ, গামা রশ্মির বিচ্ছুরণ মহাজাগতিক বস্তু ও অন্যান্য ঘটনাবলি এবং তাদের বিবর্তন ধারাকে রসায়ন ও ভূগোলের মাধ্যমে পর্যবেক্ষন এবং পদার্থবিজ্ঞান ও গানিতিক যুক্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে। আরো সাধারণ ভাবে বললে বলা যায় যে, পৃথীবির বায়ুমন্ডলের বাইরে ঘটা প্রত্যেকটি ঘটনাই জ্যোতিবিদ্যা বা Astronomy এর অন্তর্গত।
আরেকটি আলাদা শাখাও জ্যোতির্বিজ্ঞান বা Astronomy এর সাথে সম্পৃক্ত যাকে ভৌতবিশ্বতত্ত্ব বলা হয়।সাধারনত এই শাখাতে সমগ্র মহাবিশ্বকে নিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা
যারা মহাকাশ বা মহাকাশবিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করে থাকেন বা যারা মহাজাগতিক বস্তু নিয়ে বিস্তর গবেষনা করে থাকেন তাদের মহাকাশ বিজ্ঞানী (Astronomor) বলা হয়ে থাকে। যারা মহাকাশে গিয়ে কাজ করে থাকেন বা বিভিন্ন গবেষনার জন্য যাদের মহাকাশে পাঠানো হয় তাদের Astronaut বলা হয়। তবে এই Astronaut কে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয় যেমন- Cosmonaut, Gagannaut, মহাকাশচারী ইত্যাদি।
আর যারা Astronomy নিয়ে চর্চা করতে ভালবাসে বা যারা জ্যোতির্বিজ্ঞান ভালবাসে তাদের Astrophile বলা হয়।এক গবেষনার মাধ্যমে জানা গেছে যে প্রতি ১০০০ জনে ১ জন Astrophile থাকে।
মহাকাশ বিজ্ঞাণীদের ( Astronomor ) কাজ দের কাজ
প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রাচীনত্ম শাখার ভেতর একটি হলো এই জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রাচীন গ্রিক, মিশরীয়,ব্যাবলনীয়, নুবিয়ান, ভারতীয়, চিনা, ইরানি সহ বেশ কয়েকটি আমেরিকান আদিবাসী জনগোষ্ঠী রাতের আকাশ পর্যবেক্ষন করত নিয়মাবদ্ধ প্রনালীর মাধ্যমে যা লিপিবদ্ধ ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়।
প্রাচীন ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে সেলেস্টিয়াল নেভিগেশন জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষনমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞানও পজিকর আনায়নের মতো আরো নানা রকম বিষয় জ্যোতির্বিজ্ঞান অন্তর্গত ছিল। তবে এখন পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানকে প্রায়শই জ্যোতিঃপদার্থ বিজ্ঞানের সমর্থক হিসাবে ধরা হয়।
তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞান
তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞান বস্তুগুলোর মজাজাগতিক ঘটনাগুলোর বর্ননা করার জন্য আমরা অন্যন্য বিশ্লেষনধর্মী মডেল তৈরির জন্য কম্পিউটরে কাজ করা হয়।
আর জ্যোতিবৈজ্ঞানিক বস্তুগুলোর পর্যবেক্ষন করার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে এবং পর্যবেক্ষনকৃত তথ্যগুলো পদার্থবিজ্ঞানের মূল সূত্রের অনুযায়ী ব্যখ্যা করা হলো পর্যবেক্ষনমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞানের কাজ।
জ্যোতির্বিজ্ঞান বা Astronomy এই দুই শাখা একে অপরের সম্পূরক।পর্যবেক্ষনের ফলাফল ব্যাখ্যা অনুসন্ধান করা হয় তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে। অপর দিকে তাত্ত্বিক ফলাফলগুলোর সত্যতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে।
পেশাদার ও অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানী
তবে পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানী ( Astronomor) থেকে অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানী (Astronomor) থেকে কিছু কিছু বা প্রায় ক্ষেত্রে বেশি থাকে।
কারণ অপেশাদার Astronomor এর কাজই হলো সব সময় টেলিস্কোপ যোগে আকাশের দিকে চেয়ে থাকা তারা প্রতিটা মূহূর্ত ও তাঁর রের্কড ডাটা সংরক্ষন করে রাখেন। এমতোবস্থায় হঠাৎ করেই অনেক সময় অনেক অপেশাদার Astronomor নতুন বা অদ্ভুদ বস্তু মহাকাশে আবিষ্কার করে ফেলেন। এর মধ্যে দেখা যায় কয়েক আলোকবর্ষ দূরের কোণ বড় বা ছোট নক্ষত্রের বিস্ফোরন, নতুন কোন ধুমকেতুর সন্ধান, কোন নতুন তারার জন্ম বা নতুন তারা বা নক্ষত্রের খোঁজ পাওয়া, গ্যালাক্সির খোঁজ পাওয়া, কোন গ্রহের প্রাকৃতিক, কোন নতুন গ্রহ বা কোন গ্রহের প্রাকৃতিক বা চাঁদের খোঁজ পাওয়া ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে পেশাদারদের তুলনায় অপেশাদারদের ভূমিকা বেশি থাকে।
তবে মনে রাখতে হবে যে, “গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে কাজ করা বা গবেষণা করতে হয় বলে astronomer দের আবার জ্যোতিষী বলা উচিৎ নয়, যারা অতীত, বর্তমান, ভূত,ভবিষ্যৎ কুষ্ঠি বিচার বা গনণা করে। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞান বা astronomy এর সাথে জ্যোতিষশাস্ত্রের আংশিক মেলবন্ধন রয়েছে। যারা গ্রহ, নক্ষত্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে কুষ্ঠি বিচার করে অতীত, বর্তমান, ভূত ও ভবিষ্যৎ বলেন তাদের জ্যোতিষী বলা হয় আর জ্যোতিষ শাস্ত্রের ভাষায় বা বিজ্ঞানের ভাষায় তাঁদের astrologer বলা হয়ে থাকে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান ছবি গ্যালারি



এই লিখাটি পড়ুন নাসা কি।। কিভাবে সৃষ্টি হল নাসা

I am the Admin Of Jibhai.com and also part of jibhai.com
1 thought on “জ্যোতির্বিজ্ঞান কি? পেশাদার ও অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কি করেন!”